বগুড়ার ৩য় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনের আদালতে
আদালত প্রতিবদেক
বগুড়া সদর উপজেলায় ২০ বছর আগে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় রতন মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর অতিরিক্ত পিপি বিনয় কুমার। দণ্ডপ্রাপ্ত রতন মিয়া বগুড়া সদর উপজেলার মধ্য পালশা গ্রামের মৃত শুক্কর মোহাম্মাদের ছেলে। তার স্ত্রীর নাম সাকিলা খাতুন। তিনি পালশা গ্রামের আজাহার আলীর মেয়ে। ২০০২ সালের ২১ জুন সাকিলাকে হত্যা করা হয়। পরে সাকিলার ভাই সারোয়ার হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালে সদর উপজেলার মধ্য পালশা গ্রামের মৃত শুক্কর মোহাম্মাদের ছেলে রতন মিয়ার সঙ্গে একই এলাকার সাকিলা খাতুনের বিয়ে হয়। এক পর্যায়ে পারিবারিক কলহের অভিযোগ তুলে রতন ২০০২ সালের শুরুতে সাকিলাকে তালাক দেন। তবে সেই তালাকে সাকিলা রাজি না হওয়ায় ২০০২ সালের মার্চ মাসের ৪ তারিখ আবারও তারা একসঙ্গে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। ওই বছরের ২০ জুন সাকিলার ভাইয়ের বিয়েতে আবারও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এতে রাগ করে রতন তার শ্বশুর বাড়ি থেকে চলে আসেন। পরের দিন ২১ জুন রতন তার স্ত্রী সাকিলাকে কবিরাজ দেখানোর কথা বলে শ্বশুর বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। এরপর সাকিলাকে কৌশলে রতন গোদারপাড়া বাজার থেকে নিরিবিলি এক মাঠে নিয়ে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে সাকিলার গলায় ও পেটে ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে রতন পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা সাকিলার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। ওই ঘটনায় পুলিশ রতনকে আটক করলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। পরে রতনকে অভিযুক্ত করে একই বছরের ১০ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
এদিকে দীর্ঘদিন জেল হাজতে থাকার পর রতন মিয়া জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপন করেন। পরে তার অনুপস্থিতেই বিচার কাজ চলতে থাকে।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর অতিরিক্ত পিপি বিনয় কুমার দাস জানান, এ হত্যা মামলায় দীর্ঘ শুনানির পর মঙ্গলবার রতন মিয়ার অনুপস্থিতিতে ফাঁসির আদেশ দেন বিচারক। একইসঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রতন দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন।
Leave a Reply