বিশেষ প্রতিবেদক : কুষ্টিয়া দায়রা আদালতে কর্মরত প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ তাজুল ইসলাম এক বছরে আদালত চলাকালীন সময়ে ৫৫টি হত্যা মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। এর মধ্যে ২০২২ সালে জানুয়ারি মাসে ৫টি, ফেব্র“য়ারি মাসে ২টি, মার্চ মাসে ৭টি, এপ্রিল মাসে ৩টি, মে মাসে ৫ টি, জুনে ৬টি, জুলাই ৪টি, আগস্ট ৮টি, সেপ্টেম্বর ৪টি, অক্টোবর ৫টি এবং নভেম্বর মাসে ৬টি। যা এক বছরে সারাদেশের সকল দায়রা জজ আদালতের মধ্যে সর্বাধিক হত্যা মামলা নিষ্পত্তি বলে মনে করছেন বিচার সংশ্লিষ্টরা। কঠোর পরিশ্রম, আন্তরিকতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করে রেকর্ড গড়েছেন। যা বিচার বিভাগে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। তবে নিজের মেধা, বিচক্ষণতা, দক্ষতা, আন্তরিক মানসিকতা আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বিচারক তাজুল ইসলামের এ কার্যক্রম ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে। নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে মামলাজট নিরসনে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন তিনি। তার কর্মদক্ষতা ও নিরলস পরিশ্রমের কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে রেকর্ড করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা। কুষ্টিয়ার আদালতে তার কর্মকাল ১ বছর ৪ মাস এই আদালতে উক্ত সময়ের মধ্যে হত্যা মামলা ৭০টি যা প্রতি মাসে ৫ টি করে শুধু হত্যা মামলা নিষ্পত্তি। একমাসে পাঁচটি হত্যা মামলার রায় দেওয়া প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেন বিচার সংশ্লিষ্টরা। শুধু হত্যা মামলা নয় অন্যান্য সেশন মামলা যেমন- ডাকাতি মামলা, অস্ত্র মামলা এবং মাদক মামলা নিষ্পত্তিতে ও এগিয়ে রয়েছেন এই বিচারক। দেওয়ানি আদালতের আপিল মোকদ্দমা নিষ্পত্তিতে এগিয়ে এই বিচারক। কুষ্টিয়া আদালতে এই বিচারকের আদালতে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় বিচারপ্রার্থী জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আদালতপাড়ায় দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছেন বিচারক তাজুল ইসলাম। জানা গেছে, ১৫ বছরের বিচারক জীবনে তিনি যে আদালতে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানেই দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে রেকর্ড গড়েছেন। কঠোর পরিশ্রম, আন্তরিকতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার মাধ্যমে কুষ্টিয়া প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ তাজুল ইসলাম ১ বছর ৪ মাসে আট শতাধিক মামলা নিষ্পত্তি করে রেকর্ড করেছেন। যা বিচার বিভাগে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। দেশের সিংহভাগ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা জট রয়েছে। তবে নিজের মেধা, বিচক্ষণতা, দক্ষতা, আন্তরিক মানসিকতা আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বিচারক তাজুল ইসলামের এ কার্যক্রম ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এটা অন্য বিচারকরা অনুসরণ করলে বিচার বিভাগ থেকে মামলার জট নিরসন হবে। নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে মামলাজট নিরসনে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন তিনি। তার কর্মদক্ষতা ও নিরলস পরিশ্রমের কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে রেকর্ড করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিক সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম কিছুটা থমকে গিয়েছিল। সেই সময়ে ২০২১ সালের ২৭ জুন বিচারক মোঃ তাজুল ইসলাম কুষ্টিয়া প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হিসেবে যোগদান করেন। বিচারক মোঃ তাজুল ইসলাম প্রায় সাড়ে সাত শতাধিক পুরোনো মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন। দায়িত্ব নেওয়ার পর ৮০০টির অধিক মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। তার মধ্যে হত্যা মামলা ৬৪টি, অস্ত্র ও ডাকাতি মামলা শতাধিক, ফৌজদারি আপিল ৩০০টির অধিক, দেওয়ানি আপিল ৩০০টি এবং শতাধিক রিভিশন মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। যেগুলো ১০ বছর বা ১৫ বছরের অধিক পুরোনো মামলা। তিনি পুরোনো মামলাগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে নিষ্পত্তি করেছেন। মামলা নিষ্পত্তির এ সময় তাকে প্রায় এক হাজার এক শতাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্য নিতে হয়েছে। বিচারক তাজুল ইসলাম ইতোপূর্বে খুলনা, ঢাকা, মেহেরপুর, ঠাকুরগাঁও ও ঝিনাইদহ আদালতে বিচারক হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যেখানেই দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানেই দ্রত মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলা জট নিরসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ২০০৮ সালের ২২ মে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সহকারী জজ হিসেবে তিন বছর ছিলেন। এক বছর এক মাস পারিবারিক আদালতে ছিলেন।
সেখানে সাড়ে তিন হাজার মামলা ছিল। এক বছর এক মাসে ১৮০০ মামলা নিষ্পত্তি করে রেকর্ড করেছিলেন। তারপর ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে চার বছর ছিলেন। সেখানে প্রতি মাসে ৪০-৫০টি দুতরফা মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। সেখান থেকে যুগ্ম জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে এক বছর ৮ মাসে দেওয়ানি, মাদক, অস্ত্রসহ ১০০০ মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। এরপর মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে ২০১৭ এপ্রিল থেকে ২০১৮ নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরে সাড়ে ৩০০ মামলা নিষ্পত্তি করেছিলেন। ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ (ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল) হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে করোনাকালীন এক বছর ৯ মাসে ২২০০ মামলা নিষ্পত্তি করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। বিচারকাজে রাষ্ট্রপক্ষ, আইনজীবী, পুলিশ, সহায়ক কর্মচারী, প্রসিকিউশন সাইড সবার সহযোগিতা থাকলে আগামীতেও প্রচুর মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। কুষ্টিয়ার জনগণ যাতে সঠিক বিচার পান এবং বিচারপ্রার্থীদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব হয়, সে ব্যাপারে সে ব্যাপারে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম কিছুটা থমকে গিয়েছিল। সেই সময়ে মোঃ তাজুল ইসলাম কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর প্রায় সাড়ে সাত শতাধিক পুরোনো মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় নিয়ে বিচারক মোঃ তাজুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর ৮০০টির অধিক মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। তার মধ্যে হত্যা মামলা ৬৪টি, অস্ত্র ও ডাকাতি মামলা শতাধিক, ফৌজদারি আপিল ৩০০টির অধিক, দেওয়ানি আপিল ৩০০টি এবং শতাধিক রিভিশন মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। যেগুলো ১০ বছর বা ১৫ বছরের অধিক পুরোনো মামলা। তিনি পুরোনো মামলাগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে নিষ্পত্তি করেছেন। কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এক আইনজীবী বলেন, বিচারক তাজুল ইসলাম একজন দক্ষ বিচারক। মামলাজট নিরসনে তিনি বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নেন এবং দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে থাকেন। তার এই কার্যকরী পদক্ষেপের কারণে মামলাজট কমে গেছে। বিচারক তাজুল ইসলাম খুবই আন্তরিক এবং কঠোর পরিশ্রমী। তিনি কুষ্টিয়ায় আসার পর মামলা নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে। বর্তমানে বিচারপ্রার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার পাচ্ছেন। আশা করছি এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীরা সন্তুষ্ট। মামলা নিষ্পত্তির এ সময় তাকে প্রায় এক হাজার এক শতাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্য নিতে হয়েছে। আদালতে কোন সাক্ষী এলে ফেরত যায় না। আদালতের সময় শেষ হলেও সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে তাকে আদালত ত্যাগ করতে দেখা যায়। এতে করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হয়। সাক্ষী ফেরত দিলে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এজলাস সময়ের বাইরেও বিচারিক কাজ থাকলে সেটা করি। দিনের কাজ দিনে শেষ করার চেষ্টা করেন। প্রসঙ্গত, বিচারক তাজুল ইসলাম ১৯৮৪ সালের ১৫ নভেম্বর সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কুশোডাংগা ইউনিয়নের কুশোডাংগা গ্রামে মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং কলারোয়া পাইলট হাইস্কুল থেকে ২০০০ সালে এসএসসি এবং শেখ আমানুল্লাহ কলেজ থেকে ২০০২ সালে এইচএসসি পাস করেন। ২০০২-২০০৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। ২০০৬ সালে এলএলবি (সম্মান) এবং চাকরিকালিন সরকারের অনুমতি নিয়ে এলএলএম ও অপরাধ বিজ্ঞানে স্পেশাল মাস্টার্স পাস করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবন শেষ হতে না হতে সাময়িক সনদপত্র দিয়ে ২০০৮ সালে তৃতীয় বিজেএস (২০০৭ সালে আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস হওয়ার পরে প্রথম বিজেএস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৮ সালের ২২ মে সহকারী জজ হিসেবে যোগদান করেন। তারা সাত ভাই ও এক বোন। বাবা-মা বেঁচে নেই। পারিবারিক জীবনে তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জনক। তার সহধর্মিণী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
Leave a Reply