নিজস্ব প্রতিবেদক : মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উদ্যোগে গত শনিবার (৪ ফেব্রæয়ারি) সকাল ১০.০০ ঘটিকা হতে দুপুর ১২.০০ ঘটিকা পর্যন্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত। অনুষ্ঠানের শুরুতে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসানসহ উপস্থিত সকলে ১৯৫২’র মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেন। তৎপর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান সদয় অনুমতিক্রমে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার। তিনি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনক্রমে স্বাগত বক্তব্যে মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মামলার ও বিভিন্ন থানার মূলতবী পরোয়ানার বিবরণী এবং কনফারেন্সের আলোচ্য সূচী তুলে ধরেন। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা আইনজীবী সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং জেলার বিভিন্ন থানায় তদন্তাধীন থাকা মামলার তদন্ত কার্য দ্রæততা ও দক্ষতার সাথে আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ, যথাসময়ে মামলার সাক্ষী উপস্থাপন নিশ্চিত করত, তাদের নিরাপত্তা বিধান, গ্রেফতারের পর আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করার, পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে আরও তৎপর হওয়ার, নিষ্পত্তির নিমিত্তে পি.আরমূলে জব্দ থানা মালখানায় থাকা আলামতের তালিকা তৈরি করে আদালতে প্রেরণ, বহন অযোগ্য ও পচনশীল আলামত নমুনা সংরক্ষণ করে ধ্বংসের নিমিত্তে আবেদন প্রেরণ এবং মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলাসমূহের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া দ্রæত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য বিচারক ও থানার অফিসার ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। বিভিন্ন থানা থেকে আগত থানার অফিসার ইনচার্জসহ অন্যান্য উপস্থিতি কর্র্তৃক উত্থাপিত বিভিন্ন সমস্যার আইনি সমাধান, প্রশ্নোত্তর প্রদান এবং পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করত: সমাপনী বক্তব্যে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান বলেন যে, ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় বিচার প্রশাসন, নির্বাহী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একযোগে ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে বিচার প্রার্থী মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে কারও অবহেলা কাম্য নয়। সামনের দিনগুলোতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর পারষ্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় আরো গতিশীলতা আসবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করে আগত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান।
পাবলিক প্রসিকিউটর রাধাপদ দেব সজল তাঁর বক্তব্যে আদালতে প্রসিকিউশনপক্ষে নিয়োজিত সকল কৌঁসুলিকে সাক্ষ্য গ্রহণে সহায়ক হিসেবে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালনের জন্য আহবান জানান এবং আদালতে উপস্থাপিত সকল সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করার জন্য আদালতে কর্মরত বিচারকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মৌলভীবাজার আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ বদরুল হোসেন ইকবাল তাঁর বক্তব্যে আদালতে আগত সাক্ষী, বিচারপ্রার্থী জনগণ ও আইনজীবীগণের নিরাপত্তা বিধানসহ আদালত প্রাঙ্গণের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
থানার অফিসার ইনচার্জগণ যথাসময়ে ও দ্রæততার সাথে জখমীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত মেডিকেল সার্টিফিকেট সরবরাহ করার জন্য উপস্থিত সিভিল সার্জনসহ মৌলভীবাজার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং মূলতবীকৃত কিছু সংখ্যক হত্যা ও অপমৃত্যু মামলার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দ্রæততার সাথে প্রদানের জন্য তত্ত¡াবধায়ক, ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল, মৌলভীবাজার-এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব সুদর্শন কুমার রায় তাঁর বক্তব্যে মামলার তদন্ত কার্যসহ পুলিশের সার্বিক কাজে সু-পরামর্শ ও সহযোগিতা করায় মৌলভীবাজার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে কর্মরত বিচারকগণের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং কনফারেন্সে উত্থাপিত থানা সংশ্লিষ্ট সমস্যা দ্রæত সমাধানের নিমিত্তে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ^স্ত করেন।
উক্ত কনফারেন্সে মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ; অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়, অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জগলুল হক, বেগম মুমিনুন্নিসা খানম, সাইফুর রহমান, মোহাম্মদ দাউদ হসান ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এস এম আজাদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ বদরুল হোসেন ইশবাল, পাবলিক প্রসিকিউটর রাধাপদ দেব সজল, উপ-পরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, সহকারী পরিচালক, বিজিবি, শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প; জেল সুপার, পরিদর্শক, পরিবেশ অধিদপ্তর, কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক; ইন্সপেক্টর, পিবিআই ও সিআইডি, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এবং জেলার বিভিন্ন থানা ও গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জগণ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply